সমাজে নারীর ভূমিকা রচনা। ইসলামে নারী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা ২০২২
সমাজে নারীর ভূমিকা রচনা
দেশ ও জাতিগঠনমূলক সর্ববিধ কাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিদ্রোহী কবে কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন-কোন কালে একা হয়নিক জয়ী পুরুষের তরবারি প্রেরণা দিয়েছে,শক্তি দিয়েছে বিজয়ী লক্ষ্মী নারী।দেশের তথা বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী।সুতরাং এ নারীসমাজকে দেশ গঠনের উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।শিক্ষা-দীক্ষায় তাদেরকে যথার্থই যোগ্য নাগরিক হিসেবে তৈরী করতে হবে।তবেই জাতি গঠনে তারা স্মরণীয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।নারীর সার্থকতা মাতৃত্বে।এ কারণে ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত; বলে নারীর মাতৃত্বকে সর্বোচ্চ গৌরবে ভূষিত করেছে।জাতির জন্য, দেশের জন্য নারীর সবচেয়ে বড় অবদান ও সবচেয়ে বড় উপহার তার সন্তান।পৃথিবীর সকল সমাজ সংস্কারক,চিন্তাবিদ,বিজ্ঞানী,কবি, লেখক, রাষ্ট্রনায়ক তারাই প্রতিপালন করেছেন।কেবল প্রতিপালন নয়, সন্তানের জীবন গঠন এবং জীবনের দিকনির্দেশনায়ও তারা অমূল্য অবদান রেখেছেন।
ইসলামে নারী শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
হযরত মুহাম্মদ (স)এর মতো মহান ব্যক্তিত্ব,ও নিউটনের বৈজ্ঞানিক, প্লেটো,সক্রেটিস,এরিস্টটলের মতো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী,বিশ্ববিজয়ী নেপোলিয়ন সবাইকে গর্ভে ধারন করে মাতৃত্বের গৌরব অর্জন করেছে নারীই।আগামীদিনেও বৈজ্ঞানিক,লেখল,রাষ্ট্রনায়ক,সাহিত্যিক,কবি,সমাজসংস্কারক,চিন্তানায়ক প্রভৃতি দেশ গড়ার মানুষদের মানুষ করার দায়িত্ব পালন করবে নারীই।এ দায়িত্ব এ কাজ মহা গুরুত্বপূর্ণ।এ কারণেই মায়ের ঋন সন্তান কোনোদিনও শোধ করতে পারে না।অনুরূপ ভাবে দেশও জাতির পক্ষেও নারীর ঋন শোধ করা সম্ভব নয়।জাতীয় জীবনের উন্নয়ন ও দেশ গঠনে পুরুষের পাশাপাশি নারী সমাজের ভূমিকাও বিশেষ ভাবে পরিলক্ষিত হয়।বর্তমানে বিশ্বে৬৫০ কোটি লোকের অর্ধেক নারী।সুতরাং সমাজ ও সভ্যতার উউন্নয়নের জন্য নারীর ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজন।সন্তান প্রতিপালন,সন্তানের জীবন গঠন নারীর প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য হলেও জীবনের আরো অনেক ক্ষেত্রে নারীর করণীয় অনেক কিছুই রয়েছে।অতীতের মতো আজ নারী সমাজ পিছিয়ে নেই।আজ যুগের পরিবর্তনে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রসারিত হয়েছে।সেই সাথে অপরিবর্তিত হয়েছে মানুষের জীবনের গতি,বেড়েছে কাজ।আর এ পরিবর্তিত অবস্থার প্রেক্ষিতে নারীর দায়িত্বও বেড়েছে।মায়ের কাছ থেকে সন্তান যে শিক্ষা লাভ করে তাই পরবর্তী জীবনে তার চরিত্র এবং জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে সহায়তা করে।একজন মা শিক্ষিতা হওয়া মানে একটা পরিবার শিক্ষিত হওয়া। একটি পরিবার শিক্ষিত হওয়া মানে একটা সমাজ শিক্ষিত হওয়া।একটি সমাজ শিক্ষিত হওয়া মানে একটা দেশ উন্নত হওয়া।সুতরাং সন্তানের চরিত্র গঠনের মাধ্যমে নারীসমাজ জাতি গঠনে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে পারে।বিশ্বব্যাংক পরামর্শ দিয়েছে,অর্থনৈতীক কর্মকান্ডে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারলেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।বিশ্বে ৯৯৭ মিলিয়ন মহিলা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত থেকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।কৃষি ক্ষেত্রে নারীদের অবদান অপরিসীম।কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।বিশ্বব্যাংকের এক সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে,যদি আমরা কৃষি ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে পারি,তাহলে কৃষি উৎপাদন ২৪% বৃদ্ধি পাবে।জাতি গঠনে নারীসমাজের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পাতে যেমন,নারীশিক্ষার হার বাড়াতে হবেঅনগ্রসরতা ও কুসংস্কার দূর করতে হবে।যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে।কর্মমুখী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।মাতৃত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।অধিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে।সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।উপরিউক্ত পদক্ষেপ সমূহ বাস্তবায়ন করা হলে আশা করা যেতে পারে,অদূর ভবিষ্যতে আমাদের দেশের নারীসমাজ জাতি গঠনে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রাকতে পারবে।
Post By স্বপ্না মনি।